বাজরিগার পাখি পালনের নতুন নিয়ম জেনে নিন। বাজরিগার পাখি

বাজরিগার পাখি পালন করা তুলনামূলক সহজ

সুন্দর পাখি


লেখাটিতে খুব সহজে উপস্থাপন করা হয়েছে বাজরিগার পাখির খাঁচার সাইজ, বাজারিগার পাখি পালন পদ্ধতি, বাজরিগার পাখির খাবার তৈরির নিয়ম, বাচ্চা পাখির যত্ন, এক কথায় বাজারিগার পাখি পালনের সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই ভিডিওতে।

বাজরিগার পাখি কি কথা বলতে পারে?

বাজিগর পাখি গুলো বিশেষত্ব হলো ছেলে পাখিগুলি এর বাচ্চাকে লালন পালন করে থাকে। আর সব জাতের বাজিগর পাখি সঠিক ট্রেনিং কলে কথা বলতে পারে। এবং খুব স্পষ্টভাবে মানুষের মত এরা কথা বলতে পারে। মেয়ে পাখি যখন ডিমে তা দেয় তখন ছেলে পাখি মেয়ে পাখিটিকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। বাজিগর সামাজিক পাখি হওয়ার কারণে অন্যান্য যে কোন প্রাণীর সঙ্গে খুব সহজেই সখ্যতা গড়ে তোলে। মজার ব্যাপার হলো বাজিগর পাখি খুবই শারপেনের হয়ে থাকে গবেষণা করে দেখা গেছে বাজিগর পাখি খুব দ্রুত তিন সংখ্যার অংক করে ফেলতে পারে। বাজিগর সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে ইংলিশ বাজিগর এবং অস্ট্রেলিয়ান বাজিগর আমরা সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার বাজিগর বসে থাকি।

বাজরিগার পাখি কিভাবে পালন করবেন?

বাজিগর পাখি গুলো সাধারণত খাচায় পালন করা পাখি হিসেবে বহুল প্রচলিত এর জীবনকাল পাঁচ থেকে ছয় বছর হয়ে থাকে। বাজিগর পাখি গুলো চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেই এ্যাডাল্ট হয়ে যায় এবং বাচ্চাও দেওয়া শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো এরা তাদের পুরো জীবন ধরেই বাচ্চা দিতে পারে। এই পাখিগুলো ৪ থেকে ১০ টি করে ডিম দিয়ে থাকে। আর বছরে প্রায় ছয় বারের মত ডিম দিয়ে থাকে অর্থ দাঁড়ায় প্রতি দুই মাস পর পর ডিম দেয়। এবং ডিম দেওয়ার পরপরই বাচ্চাও দিয়ে থাকে তবে ভালো কৌশল হচ্ছে বছরে চারবার বাচ্চা প্রজনন এর ব্যবস্থা করা। তবে বাচ্চা দেওয়ার পর এদেরকে অন্য একটি খাচায় নিয়ে বিশ্রাম দেয়া হয়। এরা তাদের ডিমগুলো থেকে বাচ্চা দিতে 18 থেকে 19 দিন ডিমে তা দিয়ে থাকে। 

বাচ্চা দেয়ার পরপরই খাচাটি সুন্দর করে পরিষ্কার করে না হয়। বাচ্চা হওয়ার পর শাক সবজির সঙ্গে সঙ্গে চিনা কাউন ও সূর্যমুখীর বীজ খাওয়াতে হয়। আর বাচ্চাদের জন্য মুরগির ডিম সিদ্ধ করে পাওয়া রুটির সঙ্গে মিশিয়ে খাবার তৈরি করতে হয়। রোগে আক্রান্ত পাখি কি আলাদা করে রাখা হয়। এরপরে পাখির রোগ অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়।

পুরুষ পাখিটি লাফিয়ে লাফিয়ে মেয়ে পাখিটির পাসে বসে মেয়ে পাখিটিকে কাঠঠোকরা পাখির মত টোকা দেওয়া

পুরুষ পাখি মেয়ে পাখিটির ডানার উপর পা উঠাতে চেষ্টা করা

পুরুষ পাখি মেয়ে পাখিটিকে খাবার খাইয়ে দেওয়া

মেয়ে ও পুরুষ পাখির ব্রিডিং মুড লক্ষ্য করা (নাকের রং দেখে)

পাখির মধ্যে এইসব লক্ষণ দেখা গেলে এই সময় পাখির খাঁচার ভিতর হাঁড়ি বা বক্স দিন।পাখি বসার জন্য প্লাস্টিকের পাইপের পরিবর্তে গাছের ডাল ব্যবহার করুন।

এই সময় পাখির প্রচুর শক্তি প্রয়োজন হয় বলে পাখিদের অতিরিক্ত খাবার, মিনারেল ব্লক এবং ক্যালসিয়াম ব্লক দিন।

পাখির ব্রিডিং মুড লক্ষ্য করার পর বক্স বা হাঁড়ির ভিতর কিছু খড়কুটো দিয়ে দিন। মেয়ে পাখিটি এই খড়কুটো গুলো ফেলে দেওয়া শুরু করলে আপনি বুঝতে পারবেন পাখি ডিম পাড়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই পদ্ধতি আপনাকে পাখির ডিম পাড়ার আগাম বার্তা দেয়।

পাখিরা মেটিং করা শুরু করলে প্রথম ডিমটি পারতে সাধারণত ১০ দিন সময় লাগতে পারে এবং পরের ডিমগুলো প্রথম ডিম দেয়ার পর পর দিন করে পাড়তে শুরু করে। মাঝে মাঝে পাখিরা একদিন বাদ দিয়েও ডিম পাড়তে পারে। প্রথম ডিম পাড়ার ১৮-২৩ দিনের মধ্যে বাজরিগার প্রথম বাচ্চা ফুঁটায়। এটি নির্ভর করে পাখির ডিমে তাপ দেয়ার উপর। অনেক সময় বাজরিগার ৩ টি ডিম পাড়ার আগে ডিমে তাপ দিতে বসে না।

এই সময় মেয়ে পাখিটির যত্নের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে যেন পাখিটি এই কন্ডিশন থেকে বেড়িয়ে না যায়। যদি মাদী পাখিটি কোন কারন ছাড়াই ডিম ফোটানোর আগেই ডিম এ তাপ দেয়া থেকে উঠে যায় তাহলে ধারণা করা যায় যে এই মাদী পাখিটি ভাল মা নাও হতে পারে।

সতর্কতা

পাখির খাঁচার সামনে দিয়ে ঘন ঘন যাওয়া-আসা না করা

খাঁচার সামনে খেলাধুলা, উচ্চ শব্দে চেঁচামেচি না করা

পাখিদের ডিম তাপ দেয়া অবস্থায় ঘন ঘন ডিম দেখতে যেয়ে পাখিদের উত্তক্ত না করা

বাজরিগার পাখি ডিম পাড়ার লক্ষন সমূহ

(১) সেয়ার এর রঙের পরিবর্তন: সেয়ার এর রঙ সাদা থেকে ধীরে ধীরে বাদামী রঙ্গে রূপান্তরিত হবে।

(২) আচার-আচরনে পরিবর্তন: শরীরে হরমোনের প্রভাবে সে আগ্রাসী ও স্থানাভাবাপন্ন হয়ে উঠবে। তার ভিতর সবসময় তার বাসাকে রক্ষার একটা প্রবনতা দেখা যাবে।

(৩) অতিরিক্ত চর্বণ: প্রকৃতিতে স্ত্রী পাখি তার বাসা বড় এবং ফাঁপা বানানোর জন্য কামড়াতে থাকে এবং বাসা থেকে ময়লা ফেলে দেয়। আর খাঁচায় সে হাড়ির প্রবেশ পথ কামড়াতে থাকে এবং খাবারের বাটি থেকে খাবার ফেলে দিতে থাকে।

(৪) অন্ধকার আরামদায়ক স্থানে বেশি সময় কাটানো: সে কিছুটা অন্ধকার, আরামদায়ক জায়গায় বেশি সময় কাটাবে।

(৫) ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ: যে স্ত্রী পাখি খুব একটা বেশি মিনারেল ব্লক না ক্যাটলফিস বোন খায় না, ডিম পাড়ার আগে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করার জন্য সে একেবারে একটা পুরো খেয়ে শেষ করে ফেলবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url